কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েই চলছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, ভারত যদি কোনো ধরনের হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তান তার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনী প্রস্তুত রেখেছি। পরিস্থিতি যেকোনো সময় ভয়াবহ হতে পারে, সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
গত চার দিন ধরে ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর গোলাগুলি চালাচ্ছে। দুই দেশই পরস্পরকে সংঘর্ষের জন্য দায়ী করছে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় দুই ডজনের বেশি মানুষের মৃত্যুর পর।
ভারত দাবি করেছে, হামলাকারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক। তবে পাকিস্তান এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং দেশটির অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি এলে প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পরে সামা টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। সামনে যুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে।’ যদিও পরে জিও নিউজকে তিনি ব্যাখ্যা করেন, তার বক্তব্য যেন ভুলভাবে না নেওয়া হয়। তিনি শুধু বলেছেন, ‘পরবর্তী দুই থেকে চার দিন পরিস্থিতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।’
পাকিস্তান এরইমধ্যে বিভিন্ন মিত্র দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, চীন, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
অবশ্য চীন, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক ও কাতার দুই দেশের প্রতি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গু জিয়াকুন বলেন, ‘চীন আশা করে ভারত ও পাকিস্তান সংযম দেখাবে, সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ মেটাবে এবং আঞ্চলিক শান্তি রক্ষা করবে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও দুই দেশের মধ্যে দায়িত্বশীল সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখছে এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।
এছাড়া, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তারা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।