চরাঞ্চলে আগের মতো ফসল হয় না। তাই চাষবাদ বাদ দিয়ে দেড় একর জমিতে আদা চাষ শুরু করেছেন স্থানীয় জাহাঙ্গীর মিয়া, মাসুদ পারভেজ ও ফরিদপুরের বাহারুল ইসলাম নামে তিন যুবক। পরীক্ষামূলকভাবে প্রায় ১০ হাজার বস্তায় আদার চাষা রোপণ করেছেন তারা। গাছ ভালো হয়েছে, পরিচর্যাও করছেন। ভালো ফলন হলে ১০ হাজার বস্তায় প্রায় ২০ লাখ টাকার আদা বিক্রির আশা করছে এ সব উদ্যোক্তারা।
জাহাঙ্গীর মিয়ার বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের টিটা গ্রামে। তিনি ঢাকায় গাড়ির ব্যবসা করেন। চরাঞ্চল এলাকায় বদ্বীপে তার বসবাস। সেখানে নিজের বেশকিছু জমি রয়েছে। সেখানে বড় একটি পুকুরে মাছ চাষ করা হয়।
জাহাঙ্গীর বলেন, আদা চাষ সম্ভবত আমাদের উপজেলায় এটাই প্রথম। এ কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাগান মালিকসহ অনেক শ্রেণি পেশার মানুষ দেখতে আসেন। তারা বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন। আমরা আগামীতে আবহাওয়া বুঝে আরও বেশকিছু জমিতে আদার চাষ করবো বলে মনস্থির করেছি। এক একর জমিতে আম বাগান রয়েছে। সেখানে প্রায় ১০ হাজার বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে।
চাকরি সূত্রে দেশের উত্তরাঞ্চলে থাকাকালে আদা চাষের প্রচলন দেখে উদ্বুদ্ধ হন কৃষি উদ্যোক্তা মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, প্রথমে আদা চাষের উপযোগী হিসেবে জাহাঙ্গীর মিয়ার জায়গা নির্ধারণ করি। জমির মালিক জাহাঙ্গীর মিয়া ও ফরিদপুরের আরেক উদ্যোক্তা বাহারুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে চরাঞ্চলে আদার চাষ শুরু করি। বস্তায় আদা চাষে লাভবান হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হলো ভালো বীজ। আদা চাষের জন্য বস্তা, বেলে দোঁআশ মাটি, ছত্রাক নাশক স্প্রে, পানি স্প্রে ও কীটনাশক দেওয়া লাগে।
আদা চাষ দেখতে আসা বাগান মালিক সুলতান মাহমুদ বলেন, আমগাছ বড় হয়ে গেলে জমি ছায়াযুক্ত থাকে। লাঙল দিয়ে জমি চাষ করায়ও ঝামেলা হয়। এ কারণে অনেকেই জমি ফেলে রাখেন। ফলে আম ছাড়া আর কোনো ফসল উৎপাদন হয় না। এ চরাঞ্চলে এসে জাহাঙ্গীর ভাইয়ের আদা গাছ দেখে আমিও বস্তায় আদা চাষ শুরু করবো বলে ভাবছি।
টিটা চরের বাসিন্দা দেলোয়ার মিয়া বলেন, আমাদের অঞ্চলের কৃষকের অনেক পতিত জমি পড়ে আছে। যদি এ মাটি আদা চাষের উপযোগী হয়, তাহলে আমরাও এ পদ্ধতিতে আদার চাষ শুরু করবো।
আলফাডাঙ্গা কৃষি অফিসার তুষার সাহা জানান, আলফাডাঙ্গা টিটা অবহেলিত চরাঞ্চলে বস্তায় আদার চাষ হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, এ অঞ্চলে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে আদার চাষ শুরু করবে। কৃষি অফিস থেকে এ সব তরুণ উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোহিতা করা হবে।
প্রিন্ট/ডাউনলোডঃ ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, রাত ১১:৪১
সম্পাদক: সানি আজাদ
প্রকাশক: মিসেস সানি আজাদ